কবি বুদ্ধদেব বসুর একখানা হাত কবিতার বিষয়বস্তু।





কবি বুদ্ধদেব বসুর 'একখানা হাত' কবিতার বিষয়বস্তু:

কবি বুদ্ধদেব বসুর একখানা হাত কবিতাটি ১৯৩০সালে ৫ই মে রচনা করেন। পরবর্তীতে তাঁর এই কবিতাটি 'কঙ্কাবতী ও অন্যান্য কবিতা' গ্রন্থে স্থান পায়। বর্ষার মাঝরাতে শুনশান শহরে কবি একা বাড়ি ফিরছিলেন।আকাশে মেঘ ছিল। এমন সময় কবির দৃষ্টি নিবদ্ধ হয় একটি নীল আলো জ্বলতে থাকা জানলার দিকে। যদিও নিমিষে জানলাটি বন্ধ হয়ে যায় তবু এক পলকেই কবি জানলা দিয়ে একখানা সাদা হাত দেখতে পায় এই বিষয়টাকে ঘিরেই তৈরী হয় কবিতাটির রহস্যময় পরিস্থিতি। একটি রমনীর সেই কমনীয় হাতকে ঘিরে কবির মনে নানা কল্পনা জল্পনা বাসা বাঁধে। এবং সেই সুন্দর হাতের অধিকারিণী নারীকে একবার চোখে দেখার আকাঙ্খায় কবি অস্থির হয়ে পড়েন। বাড়ি ফিরে এসে প্রচণ্ড অবসন্ন অবস্থাতেও তাঁর ঘুম আসে না। তিনি বিছানায় ছটপট করতে থাকেন। এবং ভাবেন হাতখানি কার এই সত্য না জেনেই তিনি একদিন মরে যাবেন। এই ভাবনা কবির গভীর একাকীত্ব ও নিঃসঙ্গতার ফসল।

এক পলকের দেখা হলেও কবি কিয়ৎ অংশ হাতের সমস্ত খুঁটিনাটি জিনিস দেখে ফেলে। এর থেকেই বোঝা হয় অন্ধকার শহরে একমাত্র নীল আলো জ্বলতে থাকা ওই জানলাটি কবিকে কতখানি টেনে ছিল । সেই আলো কবির অন্ধকার জীবনে আশার মতো, কবির শীতার্ত জীবনে উষ্ণতার মতো। কবি যখন হীরের আংটি পরা ওই সুন্দর হাতটি দেখলেন সাথে সাথে কবির মনের অন্তরালে ভেসে উঠলো একটি নারী শরীর। একটা ইন্দ্রিয় ঘন পরিস্থিতি তৈরী হলো। ক্রমেই সেই হাতটি কবিকে এতখানি গ্রাস করলো যে কবি নিজের বিছানায় শুয়েও ঘুমাতে পারলেন না ওই হাতটিকে স্পর্শ করার সুপ্ত ইচ্ছা মনে উঁকি দিল তার সাথে এই হাটটির অধিকারিণীকে বাস্তব জীবনে কখনও খুঁজে না পাওয়ার হতাশাও কবিকে ভর করেন।


সীমা ঘোষ

Comments